প্রথম সপ্তাহেই কীভাবে বুঝবেন আপনি গর্ভবতী!


গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহে আপনি বুঝতে পারবেন সন্তান ধারণ করেছেন। তবে তা বুঝতে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। 

কারণ প্রথম দিকে খুব বেশি লক্ষণ আপনাকে ধরা দেবে না। তাই সচেতন থাকলে পিরিয়ড মিস না হলেও আপনি টের পাবেন আপনার জীবনে নতুনের আগমন।

গর্ভবতী হলে পিরিয়ড বন্ধ ছাড়াও শারীরে নানা রকম পরিবর্তন দেখা যায়। যেসব পরিবর্তন আপনাকে গর্ভধারণের ইঙ্গিত দেবে। জেনে নিন সেই লক্ষণগুলো-

১) সকালে ঘুম থেকে উঠলেই দুর্বল লাগছে। সারা দিন ক্লান্তি যেন স্নায়ুতে রয়েই যাচ্ছে। এটাকে মর্নিং সিকনেস বলে। যা গর্ভধারণের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রথম লক্ষণ। শুরুর দিকে এমনটা বেশি হয়। প্রথম একমাসে আপনার মর্নিং সিকনেস পিছু ছাড়বে না।

২) বমি বমি ভাব বা গা গোলানো প্রথম দিকের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। তবে গর্ভধারণের ৪-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এই বমির ভাব বেশি দেখা যায়। এ সময় অ্যাস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনোর স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সকালে উঠেই বমিভাব হয়ে থাকে। তবে শুধুই যে সকালে বমি হবে, তা কিন্তু নয়। দিনের যে কোনো সময় বমি হতে পারে।

৩) পিরিয়ড মিস করার আগে থেকেই প্রথম সপ্তাহে ৮০ শতাংশ নারী বমির সমস্যায় ভুগেন। আবার ৫০ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার ৬ সপ্তাহ বা তার আগে থেকে বমি অনুভূত হতে থাকে।

৪) প্রথম সপ্তাহে কিংবা তার পর থেকে শুরু হয় স্তনে ব্যথা। আবার ফুলে যাওয়া দেখে ভয় পেয়ে যাবেন না। কারণ এটাও গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ। তবে ভারীও হয়ে যেতে পারে। এই লক্ষণগুলো দেখে আপনি টেস্ট করে নিতে পারেন।

৫) গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জও আসে। তবে এটা কোনও সংক্রমণের কারণেও হতে পারে। তবে গর্ভবতী নারীদের এটা বেশি হয়। অনেকের শুরতে হয় আবার অনেকের হতে একটু সময় লাগে। হরমোন পরিবর্তনের জন্য এমনটা হয়।

৬) সর্দি, কাশি কিংবা অন্যান্য রোগের কারণে শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে গর্ভধারণের কারণেও শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। গর্ভধারণ কালে প্রোজেস্টেরোনের স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন হতে পারে। ২০ দিন পর শরীরের তাপমাত্রা ওভুলেশানের কারণে বৃদ্ধি পেলে, এটি জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনার দিকে ইঙ্গিত দেয়। তখন আপনি পরীক্ষা করতে পারেন।

৭) পিরিয়ড বন্ধ না হলেও ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভূত হলে প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়ে দেখতে পারেন। এই ক্লান্তি আপনার নতুন সংবাদের সূচনা হতে পারে।

৮) ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হতে পারে কখনও কখনও। তখন ভয় না পেয়ে চিকিৎসকের কাছেও যেতে পারেন। আবার প্রেগনেন্সি কীট কিনে নিয়মানুযায়ী ঘরেও টেস্ট করে নিতে পারেন।

৯) এই সময় খেতে একেবারেই ইচ্ছা করে না। এই অনিচ্ছাটা প্রথম সপ্তাহেই বেশি হয়। এটা গর্ভধারণের পর অধিকাংশ নারীর ক্ষেত্রেই দেখা যায়। অনেকে এমন কিছু শাক-সবজি বা খাবার খেতে শুরু করে দেন, যা তারা আগে খেতে পছন্দ করতেন না। আবার পছন্দের খাবারও তখন আর ভালো লাগে না।

১০) প্রেগনেন্সির শুরুর থেকেই মাথা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায় রক্ত সঞ্চালন এবং হরমোনের স্তর বৃদ্ধির কারণে এমন হয়। এ সময় তীব্র মাথা ব্যথার পাশাপাশি ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন।

গর্ভবতী হলে-
 
  1. আপনি গর্ভবতী কি না তা পরীক্ষা করে নিন।
  2. প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে এধরনের কীট পাওয়া যায় ফার্মেসিতেই।
  3. এগুলো আপনার প্রস্রাবে প্রেগনেন্সি হরমোনের উপস্থিতি পরীক্ষা করে।
  4. এই কিট ব্যবহার করতে কিটের গায়ে লেখা নির্দেশনা ভালমতো অনুসরণ করুন।
  5. পিরিয়ড মিস হওয়ার কমপক্ষে ১ সপ্তাহ পর পরীক্ষা করুন।

গর্ভবতী হওয়ার প্রথম ৩ মাসে নানান রকম ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে। তাই এসময় কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না হয়নি এমন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অবশ্যই ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি পান, মদপান করা এড়িয়ে চলা উচিত।


Next Post Previous Post